ভূমিকা কবিতা এই লেখা ওইসব শিশুদের জন্যে জ্ঞানী ছিলো যারা জ্ঞানী আছে যারা, শোনো শুধু তোমাদেরই বলে যাই দেখো, আহা! কতো সৎ আর ধ্যানী ছিলে সে সময়। এইসব বলে যাবো তোমাদের কাছে দেখে নিও, জেনে রেখো, যতটা ছিলাম ততটাই পাপ করে করে আর তাই আমি বোকা থেকে থেকে জেনে গেছি আজ পৃথিবীতে আরো জ্ঞানী-ধ্যানী হলো এরা... পাহাড়, বাতাস, বৃক্ষ, পাখি, জল, মাটি... এর থেকে কিছু দিয়ে যাবো তোমাদের। হে আদিম, হে উলঙ্গ সময়ের শিশু তোমাদের জন্যে লিখে যাই বারবার আর শিখি তোমাদের সব অভিধান... সাঁঝ শরীরে ঢাকা আকাশ ছিলো মেঘ সংকুল সাঁঝ শরীরে ঢাকা তোমার বাড়ি... কিনার ঘেষে রাতের ছবি আঁকা রাত কুড়াই চোখের জলে রাত কুড়াই বলে বাড়ির সব কাকপক্ষী আমায় আমায় পাঠালে কাকপাখি কী আমার থাকে, কাকপাখি তোমারি রেখে তো গেলো বাতাসে দেয়া উড়ো খবরদারি মেঘশরীরে শীতল ছিলো, শীতল ছিলো পানি তোমার বাড়ি খুঁজতে গিয়ে আমার গলে ফাঁস গলায় পড়ি ফাঁসের দড়ি চোখের জলে ভরি ফাঁসের বেলাও একটুখানি তোমায় মনে করি মাঝিয়ালি নৌকা ভাসিয়েছি আজ সুদূরের পথে ভেসে আসা তালপত্রে সুদূরের কথা। আজ বহুকাল হলো বানে ভেসে গেছে গেরস্থের ঘরে থাকা ফসলিয়া দিন নদীর ভাঙনে আজ পাঁজরের শব ঘর পোড়ে সুখে আছি জলনারী নিয়ে। ডোঙাতে বেঁধেছি ঘর, আমি মাঝি আজ... ছোট দ্বীপে ডেরা করি আকাশ ছায়ায়। আজও জানি না-তো জল কোন সুদূরের ঘুরে ঘুরে আসে ফিরে সে, আমারই ঘাটে। কোন সীমান্তে ও জল ঠিকানা তোমার...
চোখ ছিল না চোখে, ফলে... লেখা হলো জিভের কাহিনী ঘটি বাটি থালা নুনে জিভে লালা, চেটো- পালা তুই পালা, নুনবিশ্বে সাচ্চাকথা... হলেও হতে পারে ধরে নিতে পারো; আমার নুনদাতা চিরমহিয়ান, সর্বদাই নত করে রাখে মস্তকের দৃঢ়তা। ২০০৫-১৪ আগস্ট ২০০৯, কল্যাণপুর, ঢাকা।
সকাল এক পশলা রোদ্দুর এসে ছিনিয়ে নেয় সকাল ফলে ঘুম ঘুম চোখে কোনদিন সকাল দেখা হলো না! প্রতিদিন ভাবি, কাঁচাবাজার থেকে সকাল কিনে আনবো; কিন্তু হায়! প্রতিদিনই সকালগুলো দূরে আরো দূরে চলে যায় তাদের বাড়িতে, যারা প্রতিদিন সকাল মাথায় করে পসরা সাজায়। তাদের ঘরে কেবল ভোর ভোর চোখে মা আর মেয়েটি সকাল মাথায় তোলে কর্তাটিকে গঞ্জের দিকে এগিয়ে দেয়। ওই ঘরে খোঁড়া রোদ, বাজার ফেরত রুটিগুলো গিজগিজ করে। ভৌগলিক আকাশ ঘুমিয়ে থাকো, আমি থাকি পাহারায়। পাছে চোখ দুটো ঘুমে টলে তাই ঘুমকে পাঠিয়ে দিই প্রিয় আঙিনায় আমাদের ছোট ছোট গ্রাম ফেরি করে ঘুমের বাজার, ঘুমায় নদীর শব, গানের পাখির মুখরিত স্বর; পাশের বাড়ির কিচিরমিচির করা শিশুগুলো মূর্ছা যায়। একাকী আকাশ তোমাকে ঘেষেই শুয়ে থাকে রাত, তারা’রাই সে খবর ভালো জানে। আকাশ ঘুমাও যদি... আমাদের ভৌগলিক সীমারেখাগুলি- যারা শুধু বিভক্তির ইশারা পাঠায়- তারা সব ভেসে যাবে রাতের নিরবতায়। উত্তর আকাশ এখন আমার কণ্ঠে জমে আছে মেঘ, ঝড়ো হাওয়া আর একরাশ গলাডুবা অন্ধকার- ও, তুমি ঘুমিয়ে থাকো, আমি আছি পাহারায়। ছায়াবৃক্ষ ছায়ামানুষ পৃথিবীর সমান বয়সী যে বৃক্ষটি দাঁড়িয়ে আছে আমার বিপরীতে- তাকে আমার জানা হয় না। এরকম বৃক্ষদিনে প্রকৃতির কথা মনে পড়ে আর শুধু কান্না পায়, কেননা সে বৃক্ষটিকে কোনদিন জানা হলো না আমার। এই যে দীনতা আর অপরাধবোধ প্রভাবিত করে একদিন বৃক্ষ হয়ে যেতে। দূরত্ব গ্রামের কুয়াশা ভেঙে তুমি যাচ্ছো নিরন্তর। দিগন্তের কাছাকাছি মাঠ পেরিয়ে গেলেই তোমার গ্রামের বাড়ি তুমি তাই দিগন্তের ভাষা বোঝ, বোঝ মাঠে মাঠে ফসলের উর্বরতা। বেলাভূমির ঘাসেদের মাড়িয়ে গিয়ে শিখেছি তোমার শীতলতা, এখন মাইল মাইল দূরের দিকে... হেঁটে যেতে যেতে তোমার ছবি দেখতে পাই। তুমি চলে যাবে দূরে আর তাকিয়ে দেখবে- তোমার গ্রামের মুখ ছুঁয়ে ওঠা ভোরের সে সূর্য; নদীর বুকে চর জেগে উঠলে, তুমি চলে যাবে দূরদেশে- বাণিজ্যের ধারণায়। (...ভাঙনের প্রতিক্রিয়া...) বৃক্ষ একদিন বৃক্ষ হয়ে যাবো! ঠাঁয় দাঁড়িয়েই হবে, সর্বময় বিস্তার আমার। ডাল-পালা জুড়ে বসে যাবে অতিথি পাখির ঘর- পাখিদের ঘর হবো, পাতাদের সাথে খেলা হবে বাতাসের; সুদূরের কথার গুঞ্জন আমাকে ঘিরেই অনুস্মৃত হবে, মেঘ চাইলে মেঘ, রোদ চাইলে রোদ। পৃথিবীতে কত কত বৃক্ষমর্ম, বৃক্ষকথা রচিত হয়েছে! এইসব বৃক্ষকথা, সকল প্রাণির মতো মানুষেরা- জেনে গেছে; তাই আঙিনায় পদধ্বনি তার। সকল ক্লান্তির শেষে আমাকেই বলে যাবে পৃথিবীর যত যত কাহিনী ব্যঞ্জনা। একদিন বৃক্ষ হয়ে যাবো... ঠাঁয় দাঁড়িয়েই হবে সর্বময় বিস্তার আমার।
স্বপ্নে দেখা পরাজিত প্রেমের কবিতা একটি পুরনো বটগাছ। দীর্ঘ বছরের পরমায়ু নিয়ে বেঁচে থাকে। তার নিচে
ছোট ছোট গাছগুলি বেড়ে ওঠা দায়।
অসংখ্য শিরদাঁড়া। জটামাথা... কালের নিরব সাক্ষি। বহু বছরের গড়ে ওঠা প্রেমের কবিতা। কথাগুলি রেকর্ড ফাইল। শিকড়ের ভাষা। স্তব্ধ, হতবাক। ছেঁড়াপত্র। হত্যার নকশা।
এইসব বটগাছ। আমার পরোক্ষ গুরু মানে বড় গুরু। মানে লঘু। গুরু নয়... উন্নত গ্রীবায়। বটগাছ সভ্যতায়। বন্দি আজ ছোট ছোট গাছগুলি। ফলে স্বাধিনতা পুনরায় হত্যার গভীর চেষ্টা। বৃথা চেষ্টাসহ প্রতিদিন গৃহে ফেরা। পরাজিত প্রেমের কবিতা।
মহাজোট প্রকৃত কথাটি এই যা বলা হয়নি কোনদিন সেইকথা তোমাকেই বলতে চেয়েছি সজ্ঞানে, মরুর দেশে রাতের পোকাটি।
রাত হলে কাত হলে বড় ভয় লাগে এ কথায়ও হাস্যরত তোমার অবজ্ঞাসমুদয় বলতে দেয়নি মনস্তাপ, ঠুটো-প্রপীড়নমালা, ক্ষণিকের।
প্রকৃত কথাটি এই জনে জনে গৃহে গৃহে বলতে গিয়ে একা যথারীতি অসহায় দেখি, তড়িঘড়ি সব চর্বিতচর্বণে।
যদিচ সকলে জানে সনাতন কলা এই বন্ধ হোক বন্ধ হোক, বলি খান মাহাশয়, গুরু আর দাসে আজ মাখামাখি হয়ে যায়- এই নিয়ে তর্ক শুরু দেহ আর দেহীরূপ সহজ কথাটি... বড় বেশি মাথাভারি, স্থূল করে দেয়।
আর্ত-সামাজিক চিঠিতে লিখেছ ভালো, প্রসারিত হাত, সেইমতো বর্ণকথা সামর্থ্যেরে আমি কিন্তু পারি না তেমন, তবু ভেবেছি অনেক সফলতা তবে বলি, শোনো কিছু পাতার মর্মর আদিতে সুখ্যাতি ছিল, আজও আছে যথা সেই কবে গয়ানাথ, প্রিয় নেত্রকোণা... লব্ধভাঙা মিষ্টকথা রাজা-বনেদীর টের পাচ্ছি মোহমায়া, ইন্দ্রজাল এক দূরদেশ থেকে আসছে নিবর্তন সংবাদ, আবার তারা ফিরেও গিয়েছে যথাস্থানে আজ বহুদিন পর এই হলো প্রেক্ষাপট, আর্ত-সামাজিক তস্কর প্রেমিক আমি কী করে বলবো তবে অদৃশ্যেই সম্পূর্ণ বিশ্বাস ক্যালেন্ডারে শব্দবন্ধ খেলে খেলে, পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে ক্রমশই চোখে পড়ে বসে পড়ছে শুয়ে পড়ছে যুবার শব্দরা সকল কিছুর পরও মোর্শেদকে পরিপূর্ণ দেখতে চেয়েছি গদ্যভাষ্যে বেড়ে যাচ্ছে শেখ লুৎফরের পাণ্ডুলিপি দায়বদ্ধতা আরো আরো কবি আর লিখিয়ে সকল, ক্ষমা করবেন উন্নত পয়োভারে হাওড় বিষয়ে পুনরায় ভাবি, হবে নতুন সাহিত্যপ্রকাশ দীনহীন আজ, প্রিয় লুবনা ফেরদৌস জুনায়েদ এতসব তুমিও জানবে না, বিরহিত সমূহ বিলাপ ছিন্ন পত্রাবলি, সময়ের কান্নাচিহ্ন আর বিবিধ যাতনা মননের যন্ত্রণাও বেড়ে যাচ্ছে ক্রমাগত, জবাববিহীন আত্মকথা কার্যবিরহী, খণ্ডকালিন এক সাংবাদিক আমাদের সময়।
ভাষাজন্ম খুব ভোরে কিছু বাতাস এসে জড়ো হলো উঠানে এককোণে বেলিফুলে শোভিত ছিল না কোনো ঝাড় ফলে পুষ্পঘ্রাণে মোদিত ঘুমভাঙাও হলো না।
শীতকাল নয় তবু কুয়াশামিশ্রিত কণ্ঠস্বর টেলিফোনে শুনে আমাকে দাঁড়াতে হলো বিপর্যস্ত কালোমেঘও নয় যতটাসম্ভব বৃষ্টির ঝুঁকি নিয়ে চলে গেছে ট্রেন ফাঁকা রেললাইন, মাতৃভূমি আমার বহুদূরে প্রথম ভাষায় মগ্নতার মতো বিস্মৃতির গহ্বরে।
বোধ করছি মানুষের প্রবণতাগুলি কোনো লোভাতুর টানে জেগে ওঠার কৌশলে ইন্দ্রিয় লিপ্সতায় মাতে শরীর ঘেমে ওঠার পরই ভাবি কাঁদবার প্রয়োজন ছিল।
বাতাসেরা চলে গেছে পূর্বপৃথিবীর কাছাকাছি তার পিছে পিছে কাঁদতে কাঁদতে চলে যাচ্ছে মহাসময়ের শিশু- যথারীতি পরিষ্কার হচ্ছে দিবসের আলো চেনামুখব্যাপ্ত কাহিনীর দেশে।
নাহিদ হাসান আপনার কবিতা প্রায়শ পাঠ করে থাকি এইমতো জানাই আজ আকার-প্রকার যদিও আমার ক্রীড়াকর্মে কোনো আদিঅন্ত নাই।
মন্ত্রপাঠ, বর্ষাপর্ব, শরীরী বন্দনা, বয়ান, সময়জ্ঞান আর আর উলুবনে হীরাসহ ছড়ানো-ছিটানো যত বাগধারা-বাগবিধি, ঋতুকাল, মৌসুমী বায়ুর ঘটমান বর্তমান খোকনের বাড়িপথে অর্থনীতির নিয়মে মাঝি-মাল্লা আর তার রসিকতাসহ রাখো যত বিবরণ-সমীরণ এহি মোর জ্ঞাতসার এর বেশি নাই ফলে হস্ত-প্রসারণে দ্বিধা যত কণ্ঠে তত নাই; কিন্তু বেটা, দেখ মোর আত্মীয়জ্ঞানের মোহ একেবারে নাই, যে কারণে যতটা সহজ করে বলে যেতে পারো আহা দেবী, দাও যত স্তনৈশ্বর্য নিয়ে রচা হরিস-বরিস রসে মনের বচন, কুলীন পণ্ডিতি বাণী তোমার একজন ননীবালা... যার সাথে সন্তরণ-কর্মে কোনো বাধা-দ্বিধা নাই ততটা সহজ করে আমি বলি না কারণ, করনে সহজ যাহা বসনে তা ততটাই কঠিনের এইকথা আমারও চলনে ভাবনায় সর্বদাই বিরাজিত প্রায়। ফিরোজের হাতে-পায়ে ধরে বলি বাবা, তোমাদের রংপুর-কুড়িগ্রামে কী কোন সরকারি হস্তক্ষেপ নাই? ট্রেনের ব্রীজের পরে বাস যাতায়াত-গতায়াতে কী যেন কী ভয়, যদি কোন এক্সিডেন্ট হয়!
গণিত নিয়ম ভুলা ব্যাকুল কিশোর অংকশাস্ত্রজ্ঞানে এত যে বিকাশ উড়াউড়ি, শূন্যলোক, লব্ধজীবনের প্রয়াসকাহিনী ফেলে বিমোক্ষণ ব্যাকুলতা আর আমরা যেরূপে দেখি ছাদে ছাদে ওহো চাঁদ, এইভাবে থাকো তুমি পত্রিকার পাতায় পাতায় বর্ষার স্রোতের সাথে ভেসে যাওয়া ভাঙনকাহিনী, পানাফুল আর শৌচশ্রেণি- এইসব দেখে দেখে জল পড়ে স্মৃতি নড়ে আমাদের কম্পুটারে কম্পুটারে।
ব্রহ্মজ্ঞানে স্বর্ণমুদ্রা, ছুঁড়িবো মোচর সব বশীভূত গান শিল্পিত বালক দেখো আমার মুগ্ধতা-বিচরণ বিশেষণহীন তবু রূপকল্পে স্মরেছি অফল বাঞ্ছাতরু-তলে ওগো প্রহেলিকাময়, পুনরায় বাঞ্ছা করে থাকি সুন্দরমে একদিন বিমোহিত একতার শাখা-প্রশাখায় বসে আমরা তুলেছি যত বিতণ্ডের ফুল সেইরূপ গুচ্ছ গুচ্ছ আর মাখামাখি হয়ে দূরতম পাহাড়ের দেশ বেয়ে আসুক নাহিদে কবিতায়- মনে ধরে একবার দেখি তারে স্বশরীরে সমকালে, ছাপাখানায়, করুলে।
জলের পুত্র জল মুজিব মেহদী-কে চোখের জলের মধ্যে সমুদ্রের সাদৃশ্য রয়েছে এই ভেবে একদিন কাঁদতে চেয়েছি- গোপনে, জলের মোহে।
তাতে কী সম্ভব হয় সমুদ্র রচনা? এই জল- ঝর্নাও হয় না, শুধু- ছলকে ছলকে গড়িয়ে পড়েছে নিচে।
একি তবে রক্তের উষ্ণীষ? স্নানে, প্রযোজ্য হলো না আজ তবু জনে জনে পাঠ্য হলো স্নান আর তুমি ভেসে যাচ্ছো...
জলের পুত্র জল।
চাঁদের অমৃতায়ন সকল মানুষের ভিড়ে অর্থহীন এই চাঁদের অমৃতায়ন আর সকালের মতো সুন্দর হওয়া চাই মন।
রসায়ন-ফসায়ন করে করে কোথাও কোনো... ভুল হলো কিনা আজ অতীতের হিসাব সে চাঁদ আর আমি মরিচ ফুলের উপমায় একা একা শুয়ে থাকা পাহাড়ের সন্তান।
চাঁদের অমৃতায়ন / ২ নদীর স্রোতের সাথে ভাসিয়ে দিয়েছি বেদনার শিরোনাম কিছু সে খবর চাঁদ জেনে গেছে নইলে কী আর চাঁদ কালো রঙে এতো মাখামাখি করে।
দিন যায় রাত যায় কৃষ্ণচূড়া রাধাচূড়া... আমি তার চোখের বর্ষিত জল শুকালে করুণ কাঠ আগুনে পোড়াবে।
মাটির প্রতিভা প্রতিভা বিকাশে সবচেয়ে বেশি ক্ষমতা মাটিরই এবং সে স্বভাবত সহ্যপ্রাণ ফলে বুক চিরে উঠে আসা বৃক্ষগুলি তারই সহজাত, ছেঁড়ো কিংবা ধরো একথা নিশ্চিত তার গহ্বরে না ঢুকেও সম্ভব হবে বলা।
একবার মনযোগী হয়ে দেখো, সারিবদ্ধ বৃক্ষগুলি সব এক নয়; কিছু কিছু বৃক্ষ আছে যারা ফলদান করে থাকে ছেঁকে দেখলেই বুঝা যায়, মাটি থেকে উঠে এসে তারা ভিন্ন স্বাদ প্রদায়ক হয়। যেমন, দেখতে পারো- আম, জাম, কলা, বেল আপেল ও তরমুজ... সবকিছু একই মাটিরসে পুরুষ্ট হয়েছে, বহির্মুখী।
এই কার্য পৃথিবীতে সংগঠিত হচ্ছে যুগে যুগে- দীর্ঘকাল আমাদের চোখের সামনে; প্রতিভা সন্ধানে যদি মাটিমুখী প্রবর্তিত হয় কেউ- তবে একথাও প্রমাণিত হবে যে, মাটিই পুনরায় সবকিছু বক্ষমাঝে ধারণ করেছে।
তিনটি কবিতা হেন ঘটনা হেন ঘটনায়ই জ্বলিয়া ওঠেন কেহ কেহ বিবৃতিবিহীন, তরল ইন্দ্রিয়জাত। হেন ঘটনাই প্রচারিত আজ দিকে দিকে ঘরে ও বাইরে, যাহা সত্য, যথাযথ। কামসূত্র আমি আর একজন... দুজনেই এক ঘর... আমরা যখন দূরে দূরে বিচরণ... আমাদের খুব মায়া... গ্রাম্যতা চারণ... আমি যদি পজেটিভ... সে তখন নেগেটিভ... একে-অপরের আমরা দুজন ভালো... অন্ধকারে শুয়ে আছি মহাকাল... একঘরে দুজনেই সেক্সুয়াল... ঠাপাচ্ছে ঠাপাচ্ছে রোগাক্রান্ত চেতনার ঊর্ধ্বতন ঠাপাচ্ছে কলজের টুকরো ঠাপাচ্ছে অসুস্থ পিতার রক্তশ্চক্ষু ঠাপাচ্ছে মাতৃ প্রতারণা ঠাপাচ্ছে অক্ষরজ্ঞানহীনের ভাতৃপ্রীতি ঠাপাচ্ছে প্রিয়তমের দূরে থাকা ঠাপাচ্ছে সবুজের চিহ্নায়ন ঠাপাচ্ছে সময়ের অনুরণন ঠাপাচ্ছে তোমার যন্ত্রণা ঠাপাচ্ছে চরণ চলেশ ঠাপাচ্ছে অরূপিত অধিবাস ঠাপাচ্ছে নীলমণি, দেখেছি তোমার চোখে
দুরন্ত একটি গান শুধুমাত্র একটি আলোই দৃশ্যায়িত হচ্ছে কক্ষে একটি কিশোর কয়েকটি পায়রার পায়ে পায়ে বেঁধে দিচ্ছে সুতো, তার গতিকে থামিয়ে মৃদুস্বরে পরোক্ষ ভাষায় শুধু কানের পাশেই চলে যাওয়া।
সুতীক্ষ্ন আলোর প্রতিবেশ, আর মুগ্ধ হয়ে আমি দর্শকের ভূমিকায়, নিরবতা ভেঙেই চলেছি... অনন্তের গোধূলিতে একা একা দৌড়ুচ্ছে ছেলেটি দুরন্ত একটি গান উত্তুরে হাওয়ায় ভেসে যাচ্ছে।
অবহেলার কবিতা অবহেলাভরে ফেলে রাখা শব্দগুলি একদিন বেজে ওঠে! কর্ণদুর্বলতা হেতু ফেলে রেখে গেছ যে শব্দের বীজ মৃদু-কম্পমান ধ্বনি কুড়িয়ে নিয়েছি তার বিষকণ্ঠ অমরতা, অপাঙ্গপ্রেমিক পতনের সিঁড়ি এক রয়ে গেছে পেছনে সবার। পাতিলের শূন্য ইতিহাস, সাতটি হা-কার মুখ তার মধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তারার ক্ষীণ আলো তুমি যাচ্ছো জ্যোতির পেলভতায়, কীটের সন্তাপে।
শ্যামলিমা মুগ্ধ চন্দ্রিকা-কে চোখ খুলতেই দেখি কাঁদছে আমার শ্যামলিমা দূরের পাহাড় ও নক্ষত্রগুলি ঘিরে থাকা রৌদ্র পথিকেরা আজ আর নেই, ফলে- ঘুটঘুটে অন্ধকার, মশা আর পচা-বাসি গন্ধে ডুবে থাকে ভাড়াটিয়া গৃহ।
এমন নির্জন! বহুকাল পাখিগুলো ডাকে না মাঝে মাঝে এমন হয় যে কেঁদে ফেলি আপন মুগ্ধতাবশে ছুঁড়ে যাচ্ছো ঢিল তবু আজ গোপন আমার মাতৃসত্তা জেগে যাচ্ছে।
শোনো বাপী, আগেভাগে বলি বোঁটা থেকে ছিঁড়ে নিয়ে প্রতিটি ফুলের মৃত্যুখেলা... কোনো স্বাভাবিক কথা নয়।
জলরাতে ভীত, ভাসানের জলবতী, জলরাতে পানি দাও পানি দাও বলে ত্রস্ত কেউ শুকিও না জল, তবে মাছ পাবো কোথা?
নদীবৃত্তান্ত নদী নয় জলের ঢেউই পারে বলে দিতে ছলাকলা মাঝির ঘনত্ব, কী প্রকার তীক্ষ্ন লাগে পাল জেনেছি নদীর গভীরতা পাঠ করে বলেছ সে এক সূক্ষ প্রশাসন জীবতত্ত্বে... জলধর্মে, সবকিছু নদীমুখি থাকে।
একদিন নদীর কিনারে বসে ভাবছো সেকথা... জোয়ারেই ভেসে ওঠে সকল সৌন্দর্য জলের ঢেউয়ে খেলা বাড়ে শুধু পুলকিত তুমি আর দেখো মাঝখানে বয়সটা বাঁধা হলো খুব।
এ কেমন বয়স হলো যে তোমাকেও পথে শিখে নিতে হলো বৈবাহিক প্রচলন।
ক্রমে ক্রমে জানা হলো কোনো গান ছিল না নদীর স্বাভাবিক চলা ছাড়া মোহচক্রে ভাসিয়েছে, যুদ্ধে যুদ্ধে গত হলো দিন পালের হাওয়ায় আজ বুঝে গেছে দিকপাল মোহবিনা নদীও চলে না।
আমার বিশ্বাসের মতো একটি কলাপাতা মাসুম আব্বাসী, আলমগীর কবির দুই ভিন্ন সহোদর-কে অবকাশে তারাকে ভাবছি মুগ্ধতার প্রশ্নে তারা কিন্তু স্থির কবিতায়- আর রাতে যে পড়েছে জ্যোৎস্না তাও কিন্তু স্পষ্ট নয়- এই নাগরিক বৃত্তে অস্পষ্টতা ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে কেউ... আমিও ভেসেছি স্রোতে কবিতায় খুঁজেছি প্রশ্রয়।
নগর দর্পণে নির্দেশিত রাখো গাঁয়ের নিবিড় পথ; যে পথে এসেছি ক্রমাগত লোকালয় চিনে আমি, তুমি ও সে আমরা মানুষ যারা, গ্রামে যাও গভীরে নির্জন মাঠে হেঁটে গেলে দেখবে চোখের সামনে, আমার বিশ্বাসের মতো একটি কলাপাতা জ্যোৎস্নার আলোয় মুগ্ধবৎ তোমার রাত্রিরমণী স্বতোস্ফূর্তভাবে হেঁটে যাচ্ছে, নেচে যাচ্ছে।
এরকম একেকটি কলাপাতা, লাউফুল, শিমফুল- অতীত কবিতাবলী; কিন্তু আমি ভোরের আলোয় শিশিরের খোঁজে ধাবমান বহুদিন... হয়তোবা তারাগুলো কাঁদছে, এই যে শিশিরের আস্তরণ তারই সিমটম হতে পারে।
নিচে ঢুকে গেলে পতনের সবটুকু ছুঁয়ে ছুঁয়ে মর্মন্তুদ, বীতব্রতপ্রাণ মাটি ভাঁজ করে নিচে ঢুকে গেলে দেখি নীলে রাঙা আবারও আকাশ।
ভূপাতিত ভূগোলের রেখা ধরে অর্ধেক পতনটুকু বুকে করে মন্ময়, চিরকালীন আজ ঝাউবনে ঘুরি, মাটি খুঁড়ি।
মাটি খোঁড়া শেষ হয়ে গেলে ফলায়নে, এই চরাচরহীন এক টুকরো নিসর্গ পাঠাই, দেখ অবাক পৃথিবী ফের পতনের জন্যে।
যদি নিচে ঢুকে যাই... সকলই তো শাদা- বুক জুড়ে খেলা করে শাদা শাদা জলের প্রপাত।
বোবাফুল কণ্ঠ নেই আগুনের গৃহে, স্তব্ধতা-গমন আর এমন আঁধার হয়ে নক্ষত্রকে করেছ সন্দেহী, লুকিয়ে রয়েছ তুমি; ছোট ছোট তারাপথ থেকে তোমার প্রত্যাগমন, সেকথা ভেবেই একদিন ভাবতে বসেছি শুধু প্রকাশ্যে রেখেছ চোখ আর বাদবাকি অপ্রকাশ্যে রেখে দিলে বিবৃতিবিহীন।
সামান্য বৃত্তান্ত ছাড়া তোমার কি নাম? সে কথাও আড়ালে আড়ালে আজ গুঞ্জরিত হয়, শিশুঘুম নামে যদি চিনে ফেলি তবে ভুল চেনা হবে, যদি না জানি তোমার সেই বালিকা বয়স? ঋতুবতী? যেভাবে কেটেছে দিন পাগলের মত নেচে নেচে সেই রহস্যের দ্বার উন্মোচিত করে, আমি আজ গভীর আঁধার রাতে, দেখে ফেলি ঠাহরবিদ্যায় ফুটে আছো বোকাসোকা, তুমি এক পর্বত-চূড়োয়।
দি পোয়েট্রি: সার্কুলেশন অব রেইন সশব্দ বৃষ্টির প্রশ্নে তোমার ড্রইংরুম বেশ মুখরিত সাউন্ড সিস্টেমে।
বুলেটপ্রুফ বাসায় বসে বসে দেখছো চ্যানেলে অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে, বাইরে গাড়ির শব্দ পরিষ্কার বৃষ্টির বর্ষণে সিক্ত তোমার শরীর ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে যেরূপ আন্দোলিত পাতার শরীর।
ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম ভেদ করে গ্রামে গ্রামে বৃষ্টি হচ্ছে অফুরাণ- তার ধারাপাত রেইন সার্কুলেশন, আমি শিখি ছাগল তাড়ানো এক কিশোরীর থেকে... তার চোখে আন্দোলিত সহস্র বৃষ্টির প্রকাশনা।
আম আমের রসাস্বাদন প্রক্রিয়ায় মানুষেরা বেশি ক্রিয়াশীল।
শুনেই সে কি লজ্জা পেলো ভীষণ! শুধু কি লজ্জা! পক্ষগুলা ভয়েই জড়োসড়ো... বলেছে সে ওঠো, ধরো ধরো।
আর বলেছে, তুমি যাবে ভাই মোর সাথে, ছোট মোর গাঁয়ে হাত-খুলে বাতাসের আলিঙ্গন, ফসলের ঘ্রাণ শীতল হবি উতলা-সুতলা গহীন গাঙের জলে।
বকুল-আখ্যান ঝরাফুল সম্প্রদানে এঁকে রাখো স্মৃতি কিছু দুঃখ ভুলে থাকা প্রয়োজন ভেবে রাখো যে মালা আমি সে ঝরে যাওয়া বকুল ফুলের কথা ভাবি।
নিত্য নিত্য ঝরাফুলে ঘ্রাণময় বকুল-আখ্যান গাঁথা মালা যদি শুকিয়েও যায় তবু তুলে রাখো সযতনে শুকনো ফুলের সাথে ঘরময় উপস্থিতি থাকে বেদনা বিধুর মুখ, পুষে রাখা কিছু আবেদন মূলত বকুল নয় দুঃখ পুষো অস্পষ্ট মুখের।
চূড়াকে বলেছি চূড়াকে বলেছি, হেই! পেরেছি আমিও, কী কঠিন রে বাবা নেমে এলো তোমার বিশাল হাত, পাঁচটি আঙুল পড়ে গিয়েছিলে নাকি? রুগ্ন আমি, মেতে আছি চূড়ার সন্ন্যাসে পথে বেরুলেই দিকভ্রম, এটা নয় ওটা নয় নিজেকে লুকিয়ে তবে অনর্থ-যাপন।
আমার কেবলই টুটে বন্ধনযাতনা, মর্মজ্ঞান এইবার রাখো তবে ক্রীড়া, নদী হোক নদী হোক মুখোমুখি তাকালে বিষম একি! চূড়া কোথা আজ, পথিমধ্যে টেনে নিলো ফলের পসরা তুলে আনলে একঘটি জল, কালো, কটূত্ব তোমার।
সবুজ আপেলে মন, অবারিত, সকল মহিমা তার, ফলে ঈষৎ সংক্ষেপে যেই দাঁড়ালে বন্ধন ছিঁড়ে, রূদ্ধ গুরুদ্বার নিষেধ মানলে না তুমি, বললে– ফলে মগ্ন আত্মজ্ঞান, গূঢ়মর্ম জেনে তার খুলে নিও তালা।
তোমার জলের ধর্ম, মোহ, প্রেম, বীতকৃত্য, বৃষ্টি বা যা কিছু... ছিমছাম, স্নানাহারে যতটুকু প্রয়োজন মেঘ, এর বেশি সহিষ্ণুতা, কোনোদিন প্রার্থনা করনি।
মশাদের মাছিদের প্রেম, হীনদের তপ্তাচার অহোরাত্র ফলের অন্বেষা, মত্ত, মত্ততায় শরীর বিছানো তীব্র শীতল মাটির প্রকৃতির সদাচারে মর্তপাখি ওড়ে যায় ডুবে মরে দূরে কদাচিৎ সংবাদের মূর্ছনা, রসোত্তাল, পক্ষভেদ উষ্কিয়ে দিয়েছে তার হাত, নাক, মুখ, অবয়ব সবই আছে শুধু ডানা দুটি নিরাকার পরীদের হাতছানি করে চেপে ধরে ব্যাধিঘোর।
আরো আরো গূঢ়তাল হিতৈষীএষণা আরো দাও মাভৈ মাভৈ বলে মাঝি তোর লগিখানি দে না দেখি জল ভীষণ স্রোতের জোয়ারের কালে একা নদীর কিনারে বসে বলা কথা তারাদের জ্যোতি-বিবরণী ক্রুর, অত্যালাপ সংঘেসংঘে আহা! এত ছোট তোকে যে কী করে দিই...
সোনাধান, ফসলের ঝাঁপি ধনধান্যেপুষ্পেভরা কী বিরাম যতিচিহ্নে ভারানত, অদ্যাপি ভারতবর্ষ সঞ্চারিয়া আসে তোর সুধা-মহিমায়, ঘুমে থাকা পুনরায় জেগে চন্দ্রহীন এসব পত্রালীজ্ঞান, আগেই বলেছি ঋভূ জাগরকাহিনী।
সবকিছু বিসদৃশ গূঢ় ঠেকে আপ্তবাক্য এরূপ কেন রে তপ্তদাহ লতাপাতা ধরে টান, যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা আগুন ফলায় দেখি ছোটই করে দাও শুধু ছোট ছোট শাস্ত্রাচার ওহে ক্ষুদ্রের ঈশ্বর নাগরদোলায় চরে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল কেন সেদিন সম্ভবা জানবো কী করে কিছু কী বলে রেখেছ হায় ঋভূ, যক্ষভেদ! পক্ষভেদ! একদিন থেমে যাবে এইসব আঙুলচালনা।
ইশারার পাঠক্রম, পাগলের দিনলিপি দেখে নবনীতা শিক্ষয়িত্রী উদাস-আকুল, বঙ্গভাণ্ডারে বিপুল সম্ভাবনা বলে তাই! বুঝে গেলি বুঝে গেলি এত তাড়াতাড়ি শিলাগুঁড়ি কুড়িয়ে দাঁড়ানো বটতলে, কী বিভৎস কী বিভৎস নদীতে ভেসেছে লাশ।
সেই যে পেলাম ভয় সেই যে নাটের গুরু দুষ্টু প্রণোদনা দিন গেল দিন গেল অনেক অনেক দিন নতুন সূচনা, আজো একই তোর আগুনবসনা পেটে ধরে আগুন প্রথম, পুড়ে সব খাক, বিষাভ অঙ্গার একি অভিশাপ এ কি অভিশাপ হায় ঋভূ, হায় যক্ষভেদ, কদাচার।
শোয়েব শাদাব পিচপথ, যেন শুয়ে থাকা বিশাল অজগর কিন্তু ডানাঅলা কিংবা ছেড়েছে শিকড়; গভীরে কোথাও লুকিয়ে রয়েছে মুখ- মুখের হদিস নেই, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ শুধু লেজ-চিহ্নায়ক বহুমুখি; এলোমেলো দীর্ঘতায় একদিন ঢুকে গিয়েছিল নাগরিক পিঁপড়েরা নিশিন্দা পাতার দেহ নিয়ে স্তব্ধ পড়ে আছ তুমি।
ধরিত্রী সূর্যস্নান হলো না তোমার, অধিকন্তু অধিবাস প্রসবজনিত ব্যথা, থেকে গেলে গৃহে।
তোমার চারপাশে অরণ্যের পথ, লতা-গুল্মময় ফলমূল, ফুল ও ধানের প্রতিবেশ- জঙ্গলে জঙ্গলে কাঠ, হরিণ ও মেষ, কতশত বুনোপ্রাণ! দিনমান বহিঃস্থ গমন আর তুমি অভিবাসী... জানিয়েছিলে ছায়ার নিমন্ত্রণ সবুজে সবুজে।
সূর্যস্নান হলো না তোমার, বেলা শেষে প্রাগৈতিহাসিক পাহাড়ের পথে গূঢ়চারি, প্রতিক্ষায় তুমি ঝুড়িভর্তি ফলমূল, ফুল ও ধানের প্রতিবেশ
বিদ্যালয় মামুলি কয়টি বর্ণ দিয়ে হলো না বিকাশ! আরও আরও ভিন্ন বর্ণে ভাবা যেতো এইসব আমাকে ভাবতে হচ্ছে রাশি রাশি মেঘপুঞ্জ পথে পথে পদ্যনুড়ি; বৃক্ষের নিরব শোভা দূর কোনো গাঁয়ে, পাতাদের মর্ম প্রজ্জ্বলিত মেঘের পয়ার ছিল আকাশে আকাশে, সেই থেকে মাধ্যমিক জ্ঞানে বেড়েছে অনীহা ক্রমে... আজ পঁচিশের পরও সেকথা ভাবছি ঠিকই রাশি রাশি মেঘপুঞ্জ, পদ্যনুড়ি, বৃক্ষমর্ম... মাধ্যমিক চোখ আজও ফোটেনি আমার তবু মামুলি কয়টি বর্ণে বেঁধে... এত ভাবাভাবি।
নদীমুখি আমাদের এক বিলদিঘা ছিলো, জল থমথম- আজ নেই, সে গল্প এখনও হয় বর্ষায়... বর্ষায়... বুকে তার ভেসেছিলো কচুরিজীবনগুলি আর- ফেনায় ফেনায় যে দেখিয়েছিলো ভাঙনের প্রতিক্রিয়া।
সেরকম প্রতিক্রিয়াগুলি আমাকেও প্রভাবিত করে, ভীষণ অধ্যাসে হাঁকে, ভাঙে মুহুর্মুহু! আমি আজ ভাঙতে শিখেছি যমুনার ঢেউ- রাত-গভীরের সম্মোহিত শব্দগুলি, নদীগাত্রে পতনের দিন; না হয় তোমাকে ভেঙেই দেখাবো।
অজন্তা ইলোরা পাহাড় যে কাটে সে কি জানে একদা পাহাড় ছিলো পাখিদের গ্রাম সে কী জানে আজও পড়ে আছে সেইসব কংকাল ও আঙুলের চিহ্ন পাহাড়ে-পাহাড়ে।
একদা মা ছিলো পাহাড়ের ঘরকন্যা আমায় লালন করে আজ, পাহাড়-সন্তান ভাসছে পিতার চোখ, লাল সর্পায়ণ কানে মৃদু স্বর তার, তাকে মনে পড়ে।
কখনও জলাধারে পড়ে ডুবতে গিয়ে সাঁতরে সাঁতরে পাহাড়ের কথা বলি তার বুকে থাকা পাখিদের কথা বলি।
হঠাৎ কারও মুখে পাহাড়ের কথা শুনে বড় বেশি গর্ববোধে তাড়িত হয়ে বুঝতে পারি আহা! কত ধারণকর্তা ছিলেন তিনি
প্রতিপ্রজ্ঞাপণ পোকার আরেক নাম কোতি সুতি কাপড়ের ওমে জড়িয়ে জড়িয়ে... দখিনা বাতাস নিয়ে ভাবি- আর যেনো পোকাবৃষ্টি না হয় উত্তরে।
এরই মধ্যে ঘটে গেল হিতে-বিপরীত কিছু দাঙ্গা আর ক্ষয় ঢুকে গেল গভীরে নদীর, কালো-জলে, চোখ খোলেনি যদিও, তবু করে যাচ্ছো চোখের চিকিৎসা... অন্ধরাত্রে চোখ নয় বোধের টেবিলে মাখামাখি।
সবুজ সবুজ স্বপ্ন তুমি ছুঁড়ে দিলে জনান্তিকে আর লাঙলের ব্যবহার শিখেছিলো যারা কোটি কোটি ধ্বংসযজ্ঞ পেরিয়ে তারা আজও বেঁচে আছে তোমার প্রজ্ঞায়।
প্রতারণা জ্বলে জ্বলে উঠে আসে আগুন, সাপের জিভ দুফলা উত্থান। নদীগর্ভে থাকে না বিষাক্ত কোনো সাপ জলের গভীরে শুধু বালি আর মৎস্য সন্তরণ আগুনের ক্ষীয়মাণ প্রতারণা তবু ভেতরে ভেতরে পুড়ে চোখের উদ্ভাস।
চোখের সামনে বালি আর মাছগুলি সাপ শূন্যতাগুলিও সাপ হচ্ছে ধীরে ধীরে আগুনের কাজ কিন্তু জ্বলে ওঠা, জ্বলা তবু আজ জ্বলছে না, জ্বালাচ্ছে না ফেলে আসা পশ্চাতের চোখগুলি ছাড়া।
চৈত্রের কবিতা আমাদের গ্রামগুলি সবুজে সবুজে ছেয়ে গেলে চৈত্রেরা দাবিয়ে পড়ে খরাদাহে। এ-তো বড় ধুরন্দর হাওয়া! এলোমেলো বহে- আমাদের অনাথ আশ্রমে, ঝরে বাঁশপাতা শুকনো মর্মর।
বৈশাখের বাতাসের তাড়নায় সেইসব ঝরাপাতাও একদিন গান গেয়ে ওঠে, পাতাদের গান হয়! মৃদু মৃদু গানে ভেসে যায় সবুজ সুমন্ত গ্রাম।
পুনরায় সবুজ বনানী আবার বিষণ্ন কোনো সবুজ বনানী, তিরোধানে- আমার গণনা-ফল ভাবনারহিত; দু’কূল প্লাবিয়া নদী, অবশেষে... কোন কূলে ডেকে নেয় স্রোতের বহতা ডুবুক ধানের স্বপ্ন, কৃষকের ক্ষতি কার তাতে কী? খেলা দেখাবার সাধ যার, সে দেখায় গোপে গোপে আমার সাধের সীমা, বিনিদ্র রাতের পরে পুনরায় সবুজ বনানী, কাটা ধানক্ষেত আর বাকি থাকা কিছু কথা ভরতনাট্যমে।
শীত যত বাড়ে সাথে সাথে উদ্বিগ্নতাও এবার শীতের শেষে চিড়িয়াদর্শনে- ফেলনা ঢিলের প্রভাব কঠিন তাপস, লুকিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে।
ভোর বিকেল ঘনিয়ে এলে কোনো কোনো দুপুর কর্কশ মনে হয় যদিও দুপুরে ভূমণ্ডল বেশি আলোময়। দিবসের এই রৌদ্রালাপ, প্রচণ্ড প্রতাপ কারু-মুখরতা আমরা জেনেছি শেষে পঠিত বিকেল সমাবেশে শিক্ষাময় এই বিকেলেরা আজ আমাদের ঘরে ঘরে জননীর মতো।
দুপুরগুলোর মধ্যে পিতাদের ছায়া নিহিত রয়েছে ফলে পিতৃত্বের চোখ থেকে আমাদের যাত্রা কিন্তু আরেকটু নির্জনতা কিংবা কুয়াশার দিকে- পথই আজ বলে দিচ্ছে কতগুলা ভোর ফেলে এসেছি আমরা।
মুখোমুখি, সেমিনার সবর্ত্র সূর্যই কামনা আমার একা নই সাথে থাকে আমারই তীর্যক ছায়া।
কিন্তু এ অবাক কাণ্ড, ছায়া কই রাতের জার্নালে- ঘুরে দেখি সূর্যের করুণা! ফিরে গেলে মুখোমুখি ছায়ার যাতনা- তবে যাবো কই এ গোধূলি রাজ্য ছেড়ে?
যদিও কোথাও অন্ধকার বিষয়ক সেমিনারই নই তবু কুয়াশার চিত্র আঁকি আর ভাবি নানাকাণ্ড, বিবিধ যাতনা... আমি না হলে থাকতো না কোনো ছায়ার মন্ত্রণা।
পদ্মা কিংবা গঙ্গা একই আকাশের ছায়ায় বেড়ে উঠি পদ্মাপুত্র, ওপারে গঙ্গাকন্যা। পদ্মা কিংবা গঙ্গা জননী আমার আমি অবগাহন করছি তোমারই জলে... ওপারে গঙ্গাকন্যাও... ওকে দেখি না। ও যদি কচুরি ছাড়ে তো ভেসে ভেসে চলে আসে এঘাটে, ওকে ছুঁতে পারি না দুই দিগন্তের কতো দীর্ঘ জননী তুমি!
আদিম লতায় জড়িয়ে গাছেদের ভাষা শিখে নিলে হে আদিম তোমাকে দেবো নিসর্গের রাখালি চাষ করো এ অনাবাদী মাটি আমি আকাশের নক্ষত্রগুলো ফেলে দিয়ে রোদ্দুরটাকে পিঠ দিয়ে ঠেকিয়ে পাহাড়ের দিকে হাঁটছি...
গজারি বাগান থেকে দুঃখগুলো তুলে আনবো ঝরে যাওয়া সেগুন পাতাগুলো কুড়িয়ে আনবো ভাঁজে ভাঁজে সাজিয়ে রাখবো খাতার পাতায় ভূগোলের জন্য একটি মানচিত্র বানিয়ে দেবো। হে আদিম, আমি, তোমার দিকে আসছি...
উৎসব মৃত ব্যাঙটিকে সুতোয় বেঁধে নাড়াচাড়া করে। শবাসনে উঠে ফুল, কলা, বেল, নারকেল-মোয়া। পেছন থেকে একতাল মেঘ হল্লা করে উড়ে গেলো আকাশে। বেল্লিক, বেল্লিক। অশুচি কন্যাকে রাখা হলো শুদ্ধ ঘরে। ফিরে আসবে শুদ্ধ হয়ে। ব্যাঙমাতা গো... শেঠপুত্র ব্যবসায় দিয়েছি মন। যদি কৃপা করো! বিদ্যার্থীর চোখে ভাসে বই, খাতা, বিদ্যাপাতা- কতোগুলি অহল্যার চোখে স্বপ্ন, আরও সুন্দর হয়ে উঠি যেন। মাগো কৃপা করো। ভেতর থেকে পেঁচার কণ্ঠে শোনা গেলো অন্ধকার... অন্ধকার...
একবিংশে মধ্যবিত্ত কথাগুলো যে বছর আমি শিখি নদীস্রোত, চলার বৃত্তান্ত সে বছরই বাবা বলে... থাক থাক তোমাকে সুতোয় বেঁধে ফেলা জরুরি এখন...
কাল যদি অন্ধকার ফোটে ভুলে যাবে পথ-ঘাট, পরিচিত নদী, প্রিয় বিলদিঘা, আমার বসন্তে- কোকিলেরা গেয়েছিলো গান আর তুমি বলেছিলে... রেডিওটা ফেলে দাও বাবা, তার চেয়ে চলো একটা কম্প্যুটার কিনে ফেলি!
আমাদের অন্ধকার থেকে কথা বলে একজন... আমার সন্তান। কাল স্টাডি ট্যুরে যাবো চাঁদের মাটিতে, পাশাপাশি মঙ্গলেও; চেকটা সই করে যেয়ো... সন্ধ্যায়ই ফিরবো।
উপকথা মাটি চাষ করেছি বহুবার মনের মতো নয় একবার কৃষক হয়েছি বহুবার মনের মতো নয় একবার জোয়াল কাঁধে তুলেছি বহুবার মনের মতো নয় একবার ধানছড়া গন্ধ শুঁকেছি বহুবার মনের মতো নয় একবার কবিতা লিখেছি বহুবার মনের মতো নয় একবার জীবন ধারণ করেছি বহুবার মনের মতো নয় একবার।
I am a, I mean contemporary young poetic personality of Bangladesh. Journalist, Sub Editor & Page Editor Of Literature & Media (The Daily Amader Somoy, July 2004-March 2005) Founder Director of First little magazine library movement of Bangladesh (2005), Executive Of `Pathsutro' a First class printing company (January-2008 to June-2008). Currently I Am get a writer ship of SAPTAHIK KAGOJ (Literary Weekly Of The Daily Amader Somoy). I Am Also Editor & Publisher Of A Little mag `HAOR'. Have a poetry book `Hottitiguchchho' by six young poet of my contemporary. published was 2000 by `Srabon Prokashoni' shabag, Dhaka. Also Have Six Script. Poetry book `PATAR JIBONI' (Lives Of Leaf) `NOKSHIKATHAY KOYEKTI DRISHBOSUTO, Shortstory `MOHINIBIBOR' (Flebar Of Cenamis), Easy `BANGLA KOBITAR BHOBISSOT, (Future Of Bengoli Poem) `KOBITAR SONCHARON-DHARA. SelfStory `AMAR SOMOY' (The Goddess)